
চির প্রেরণার অমর একুশে আজ
বরিশাল পোস্ট ডেস্ক : আজ মাতৃভাষা আন্দোলনের ৭৩ বছর পূর্ণ হলো। ইতিহাসের গৌরবময় একটি দিন, অমর একুশে ফেব্রুয়ারি—মহান শহীদ দিবস এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। ১৯৫২ সালের এই দিনে মাতৃভাষা বাংলার অধিকার আদায়ে জীবন উৎসর্গ করেছিলেন সালাম, বরকত, রফিক, শফিউর ও জব্বারসহ আরও অনেকে। তাদের রক্তে ঢাকার রাজপথ রঞ্জিত হয়েছিল, আর বাঙালির অধিকার আদায়ের সংগ্রামে যুক্ত হয়েছিল নতুন এক অধ্যায়।
জাতিসংঘের স্বীকৃতি অনুসারে, একুশে ফেব্রুয়ারি এখন কেবল বাংলাদেশের গণ্ডিতে সীমাবদ্ধ নয়। এটি বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালিত হয়, যা বাঙালি জাতির জন্য গর্বের এক অনন্য অর্জন।
একুশে ফেব্রুয়ারি মানেই ভাষার জন্য আত্মত্যাগের অমর স্মৃতি। শোষকের চোখ রাঙানি উপেক্ষা করে বাঙালি বুলেটের সামনে বুক পেতে দিয়েছিল, শুধু মাতৃভাষা বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দিতে। এই দিনটি পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর অন্যায়ের শৃঙ্খল ভাঙার সূচনা।
১৯৪৭ সালে উপমহাদেশ ভাগের পর পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী বাংলাভাষাকে উপেক্ষা করে উর্দুকে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা হিসেবে ঘোষণা দেয়। এর প্রতিবাদে ১৯৫২ সালের এই দিনে ছাত্রসমাজ এবং সাধারণ মানুষ প্রশাসনের ১৪৪ ধারা ভেঙে রাজপথে নেমে আসে। সেই তাজা রক্তের বিনিময়ে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে বাধ্য হয় শাসকগোষ্ঠী।
একুশে ফেব্রুয়ারি তাই বাঙালির শোক, গর্ব আর আত্মত্যাগের এক অবিস্মরণীয় দিন। ১৯৯৯ সালে ইউনেসকোর স্বীকৃতির মাধ্যমে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দিনটি আরও গৌরবের ছোঁয়া পায়। আজ সারা বিশ্বেই দিনটি ভাষার অধিকারের প্রতীক হিসেবে স্মরণ করা হয়।
মাতৃভাষার জন্য আত্মদানের এই দিনটি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—ভাষা শুধু যোগাযোগের মাধ্যম নয়, এটি জাতির আত্মপরিচয় এবং মর্যাদার প্রতীক।