বরিশাল

চাঁদাবাজে অতিষ্ঠ তালতলী বাজারের মৎস্য ব্যবসায়ীরা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বরিশাল পোস্ট : গত ৫ আগস্টের আগে ছিলেন আওয়ামী লীগের দোসর। মৎস্যজীবী লীগ নেতার নেতৃত্বে চাঁদাবাজি, দখলবাজিসহ নানা কর্মকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। তারাই এখন বিএনপির তকমা লাগিয়ে চাঁদাবাজি শুরু করেছেন মৎস্য বাজারে। মৎস্য ব্যবসায়ীদের জিম্মি করে প্রতিদিন হাতিয়ে নিচ্ছেন হাজার হাজার টাকা। এমন অভিযোগ বরিশাল নগরীর আমানতগঞ্জের নীরব সিকদারের ছেলে মামিত সিকদার, বাচ্চু সিকদারের ছেলে মিলন সিকদার ও আমানুল কবীর টুলুর ছেলে মারুফ সিকদারের বিরুদ্ধে। তাদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ প্রায় শহরতলির তালতলী বাজারের মৎস্য ব্যবসায়ীরা।

বাজারের ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে কেন্দ্রীয় মৎস্যজীবী লীগ নেতা খান হাবিব এবং সিটি করপোরেশনের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর সামসুদ্দোহা আবিদের অনুসারী ছিলেন উত্তর আমানতগঞ্জের তামিম ও একই এলাকার বিপিএড কলেজ সংলগ্নের বাসিন্দা মারুফ সিকদার। এছাড়া বরিশাল সিটির সাবেক মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর শ্বশুর আনোয়ার হোসেনের লোক ছিলেন বেলতলা এলাকার লীমন সিকদার। ইতোপূর্বে হাবিব এবং সাদিকের অনুসারী হিসেবে তালতলী মৎস্য বাজারে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা তুলতেন তারা। ট্রাক থামিয়ে প্রতি ব্যারেল মাছ থেকে একশত টাকা করে চাঁদা তুলতেন তারা।

ব্যবসায়ীরা বলেন, গত বছর পাঁচ আগস্ট স্বৈরাচারি সরকার পতন হলেও চাঁদাবাজি থেমে নেই স্বৈরাচারের দোসর তামিম, মিলন ও মারুফের। এখন বাজার থেকে চাঁদা তুলতে না পেরে পথে পথে মাছের ট্রাক থামিয়ে চাঁদাবাজি করছেন এই তিন যুবক।

ব্যবসায়ীরা জানান, প্রতিদিন সকাল ৭টা থেকে ১০টা পর্যন্ত তালতলীর পাইকারী মৎস্য বাজারে বেচাকেনা জমজমাট থাকে। বছরে পর বছর জেলেদের দাদন দিয়ে এ বাজারে মাছের ব্যবসা করছেন তারা। জেলেরা সারাদিন-রাত নদীতে মাছ ধরে নিয়ে আসেন তালতলীর এ বাজারে। একশ মন ইলিশের মধ্যে ৫-১০ মন জাটকা পাওয়া যায়। পরে ট্রাক ভর্তি করে সব মাছ পাঠানো হয় দেশের বিভিন্ন স্থানে। মাছ নেয়ার পথে তালতলী থেকে সোনালী আইসক্রিমের মোড় পর্যন্ত সড়কের বিভিন্ন স্থানে ট্রাক থামিয়ে জাটকা পাচারের অভিযোগ তুলে গাড়ি প্রতি ৫ থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করছে সংঘবদ্ধ চাঁদাবাজ চক্রটি। যারা অনলাইন নিউজ পোর্টাল খুলে নিজেদের সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে এলাকায় চাঁদাবাজি করেন। তিন চাঁদাবাজ ট্রাক থেকে চাঁদা তুলতে ব্যর্থ হলে খবর দেন কথিত সাংবাদিকদের। তারা গিয়ে ভয়ভিতি দেখিয়ে চাঁদা আদায় করেন। চাঁদা না দিলেই মৎস্য বিভাগের লোকেদের খবর দিয়ে হয়রানি করা হয় ব্যবসায়ীদের।

ব্যবসায়ীরা বলেন, সংঘবদ্ধ চাঁদাবাজ চক্রটি গত পাঁচ আগস্টের পর থেকেই মাছের ট্রাক থামিয়ে এমন চাঁদাবাজি করছে। টাকা না দিলে নানাভাবে হয়রানি করছে ব্যবসায়ীদের। তাদের অত্যাচারে এখন অতিষ্ঠ তালতলীর মৎস্য ব্যবসায়ীরা। এমন পরিস্থিতিতে সেনাবাহিনী, পুলিশ এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছেন তারা।

আরও দেখান

সম্পর্কিত খবর

Back to top button