প্রধান শিরোনামবরিশাল নগরী

বরিশালে স্বামী-স্ত্রীর মাদকের হাট জমজমাট!

পুলিশ কমিশনারের কাছে অভিযোগ দায়ের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বরিশাল পোস্ট ॥ বরিশাল নগরীর কাউনিয়া হাউজিং এলাকায় মাদক ও চোরাই পণ্যের অবৈধ ব্যবসা বন্ধে পুলিশের জরুরি হস্তক্ষেপ চেয়ে অভিযোগপত্র দিয়েছে স্থানীয় বাসিন্দারা। সম্প্রতি বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের (বিএমপি) পুলিশ কমিশনার বরাবর দাখিল করা ওই অভিযোগপত্রে বলা হয়, কাউনিয়া এলাকার শহীদ আরজুমনি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বিপরীতে হানিফ ও মুন্নি দম্পতির নিয়ন্ত্রণে গাঁজা, ইয়াবা বিক্রিসহ চোরাই পণ্যের বাণিজ্য চলছে।

অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, দিনের আলোতেই প্রকাশ্যে মাদক কেনাবেচা ও সেবন চলে, যার ফলে এলাকার পরিবেশ অশান্ত হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের নৈতিক অবক্ষয়ের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এছাড়া, মাদক কারবারিদের সক্রিয়তায় অপরাধ ও সহিংসতা বৃদ্ধির পাশাপাশি ভাঙারির দোকানের আড়ালে চোরাই অটোরিকশার ব্যাটারি, মোবাইল ফোন ও ইলেকট্রনিক সামগ্রীর অবৈধ কেনাবেচা চলছে। এলাকাবাসী দাবি করেছেন, অবিলম্বে হানিফ-মুন্নি দম্পতিসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ এবং নিয়মিত পুলিশি অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে মাদক পাচারের নেটওয়ার্ক ধ্বংস করা হোক।

এদিকে, স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, হানিফ ও মুন্নি দম্পতির মাদক ও চোরাই পণ্যের দাপটে কাউনিয়াধীন দুই এলাকার কয়েক হাজার বাসিন্দা দীর্ঘদিন ধরে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। একাধিকবার থানায় অভিযোগ জানানো হলেও এখনো কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বরং মাদকবিরোধী দাবিতে যুবসমাজের প্রতিবাদ সত্ত্বেও অপ্রতিরোধযোগ্যভাবে চলছে তাদের অবৈধ কর্মকাণ্ড।

স্থানীয়দের অভিযোগ, মাদক কারবারিদের পেছনে পুলিশের কিছু অসাধু সদস্যের মদদ রয়েছে, যারা নিয়মিত গাঁজা ও ইয়াবার যোগান দিচ্ছে। এছাড়া মুন্নি-হানিফ দম্পতির বিরুদ্ধে চোরাই রিকশা ও ব্যাটারি কেনাবেচারও অভিযোগ পাওয়া গেছে। শহীদ আরজুমনি বিদ্যালয়ের সামনে তাদের পরিচালিত ভাঙারির দোকানটি এখন চোরাই পণ্যের একটি গোপন আস্তানায় পরিণত হয়েছে।

এলাকাবাসীর ভাষ্যমতে, মাদকসেবীদের উৎপাতের কারণে সকাল-সন্ধ্যায় নারীদের চলাচলেও চরম নিরাপত্তাহীনতা তৈরি হয়েছে। প্রায়শই তারা অপ্রত্যাশিত ও বিব্রতকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হচ্ছেন। মাদকাসক্ত যুবকদের দৌরাত্ম্যে এলাকার শান্তি শৃঙ্খলা মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে।

মাদক ব্যবসার স্পটটি শহীদ আরজু মনি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ঠিক উল্টোপাশে হওয়ায় শিক্ষার্থীরাও এর ভয়াবহ প্রভাবে পড়ছে।

এবিষয়ে শহীদ আরজু মনি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এ,কে,এম কামরুল জানান, একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশে এভাবে মাদক ব্যবসার প্রশ্রয় দেয়া উচিত নয়। এতে ছাত্র-ছাত্রীদের উপর প্রভাব পড়ে বলেও জানান তিনি।

এবিষয়ে উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) সুশান্ত সরকার জানান, আমাদের মাদক বিরোধী অভিযান চলমান রয়েছে। দ্রুত সকল মাদক ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় আনা হবে।

অন্যদিকে বর্তমানে বাসিন্দারা দ্রুত আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য পুলিশ কমিশনার ও উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) সহ পুলিশ প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

আরও দেখান

সম্পর্কিত খবর

Back to top button