
বরিশালে প্রেমিককে হত্যার ঘটনায় প্রেমিকা ও তার বাবাসহ গ্রেফতার ৩
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বরিশাল পোস্ট ॥ নগরীতে হত্যা মামলায় মেয়ে ও বাবা এবং গৌরনদীতে ভাসুর হত্যায় ছোট ভাইয়ের স্ত্রীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রবিবার পৃথক অভিযানে কোতয়ালী মডেল থানা ও গৌরনদী মডেল থানা পুলিশ এ অভিযান করেছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো-বরিশাল নগরীর ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের শেরে বাংলা সড়কের বাসিন্দা বাবা শওকত হোসেন মোল্লা (৬৩), তার কন্যা হাফিজা বেগম শান্তা (৩১) ও গৌরনদীর সিঙ্গা গ্রামের জাহাঙ্গীর ফকিরের স্ত্রী সুরমা আক্তার।
পুলিশ জানিয়েছে, প্রেমিক মাসুদুর রহমান মাসুদকে (৪৫) গত ৯ এপ্রিল নগরীর কলেজ এভিনিউর ভাড়া বাসায় কুপিয়ে জখম করে প্রেমিকা শান্তাসহ পরিবার। গত এপ্রিল চিকিৎসাধীন অবস্থায় মাসুদের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নিহতের ভাই কোতয়ালী মডেল থানায় মামলা করেন। মামলার আসামী শান্তা ও তার বাবাকে রোববার গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
কোতয়ালী মডেল থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, মামলা দায়েরর পর থানা পুলিশের সদস্যরা মৃতদেহের সুরতহাল ও ময়নাতদন্তসহ প্রাথমিক কার্যাবলি সম্পাদন করে ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটনে কাজ শুরু করে।
যার ধারাবাহিকতায় গোয়েন্দা তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় অভিযুক্ত প্রেমিকা হাফিজা বেগম শান্তা ও তার বাবা শওকত হোসেন মোল্লাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
প্রাথমিক তদন্তের সূত্র ধরে তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই রাজীব রেজা জানান, অভিযুক্ত হাফিজা বেগম ওরফে শান্তার সাথে ভিকটিম মাসুদুর রহমানের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং দীর্ঘদিন থেকে শান্তা তার (নিহত ব্যবসায়ীর) টাকা পয়সা আত্মসাৎ করে আসছে। অভিযুক্ত শান্তা ঘটনার দিন ব্যবসায়ী মাসুদুর রহমানকে প্ররোচিত করে তার ভাড়া বাসায় নিয়ে যায় এবং বিয়ে করার জন্য মৌখিকভাবে চাপ প্রয়োগ করে। তবে তাতে রাজি না হলে অভিযুক্ত শান্তা তার অপর সহযোগী অভিযুক্তদের সহায়তায় ব্যবসায়ী মাসুদুর রহমানকে হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর করে। পাশাপাশি ব্যবসায়ী মাসুদুর রহমানের সাথে থাকা ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। পরবর্তীতে ব্যবসায়ী মাসুদুর রহমানকে গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয় লোকজন চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করালে ভিকটিম চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।
গৌরনদী মডেল থানার ওসি (তদন্ত) মো. মাহবুবুর রহমান জানান, গৌরনদী সিঙ্গা গ্রামের বাড়ির চলাচলের পথ নিয়ে বড় ভাই দেলোয়ার হোসেন ফকিরের সাথে ছোট ভাই জাহাঙ্গীর ফকির বিরোধ ছিলো। শনিবার বিকেলে দুই পরিবারের গরুর বাছুর নিয়ে দ্বন্দের একপর্যায়ে দেলোয়ারের গলা চেপে ধরে ছোট ভাই জাহাঙ্গীর ও তার স্ত্রী সুমা। এতে দেলোয়ার ঘটনাস্থলেই মারা যায়। খবর পেয়ে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।
তিনি আরও জানিয়েছেন, এ ঘটনায় রাতেই নিহতের স্ত্রী সাথী বেগম বাদী হয়ে তার দেবর জাহাঙ্গীর ফকির ও জা সুরমা বেগমকে আসামী করে থানায় হত্যা মামলা করে। পরে অভিযান চালিয়ে মামলার আসামী সুমা বেগমকে গ্রেফতার করা হয়। বাকি আসামীকে গ্রেপ্তারের অভিযান চলছে।