প্রধান শিরোনামবরিশাল নগরী

বরিশালে কাঁচামরিচের বাজারে উত্তাপ!

বরিশালে কাঁচামরিচের বাজারে উত্তাপ!

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বরিশাল পোস্ট : বরিশালের বাজারে এক সপ্তাহ ধরে কাঁচামরিচসহ বিভিন্ন সবজির দাম বেড়ে ক্রেতাদের নাভিশ্বাস উঠেছে। কাঁচামরিচের কেজি এখন ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা সাধারণ মানুষের জন্য বড় ধাক্কা। একই সঙ্গে মাছ ও মাংসের দামও বেড়ে যাওয়ায় নিম্ন আয়ের মানুষদের ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে।

 

পাইকারি বিক্রেতারা জানিয়েছেন, দুর্গাপূজার ছুটির কারণে পোর্টগুলো বন্ধ থাকায় সরবরাহে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। ফলে বাজারে পণ্যের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। তবে পোর্ট খুলে গেলে দুই-এক দিনের মধ্যেই বাজার স্বাভাবিক হবে বলে আশা করছেন তারা।

 

সোমবার (৬ অক্টোবর) বরিশালের পোর্ট রোড বাজার, বাংলাবাজার, সাগরদীসহ বিভিন্ন পাইকারি বাজার ঘুরে দেখা গেছে—বেগুন লম্বা বিক্রি হচ্ছে কেজি ৩৫–৪০ টাকা, বেগুন গোল ৫৫–৬০ টাকা, শসা ২৫–৩০ টাকা, বরবটি ৪৫–৫০ টাকা, করলা ৫০–৫৫ টাকা, টমেটো (ইন্ডিয়ান) ১২০ টাকা এবং গাজর (ইন্ডিয়ান) ১০০ টাকা কেজি। তবে খুচরা বাজারে এসব সবজির দাম পাইকারির তুলনায় ২০–৩০ টাকা বেশি।

 

পাইকারি বাজারে কাঁচামরিচ কেজি ৩৫০–৪০০ টাকা, বেগম লম্বা ৫৫–৬০ টাকা, বেগুন গোল ৭০–৮০ টাকা, শসা ৪৫ টাকা, বরবটি ৫৫–৬০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, টমেটো (ইন্ডিয়ান) ১৫০ টাকা এবং গাজর (ইন্ডিয়ান) ১৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

 

মাংসের দামেও ঊর্ধ্বগতি দেখা গেছে। ব্রয়লার মুরগি কেজি ১৫০–১৬০ টাকা, সোনালি মুরগি ২৭০–২৮০ টাকা, লেয়ার মুরগি ২৫০–২৭০ টাকা, গরুর মাংস ৭৫০ টাকা এবং খাসির মাংস ১১৫০ টাকা কেজি।

 

ইলিশ ধরা বন্ধ থাকায় অন্যান্য মাছের দামও বেড়েছে। রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩০০–৪৫০ টাকায়, টেংরা ৫০০–৬০০ টাকা, তেলাপিয়া (ঘেরের) ১২০–১৪০ টাকা, পাঙাশ ২০০–২৮০ টাকা, চিংড়ি ৫৫০–৮৫০ টাকা, পাবদা ২৫০–৪০০ টাকা এবং মাঝারি ভেটকি মাছ ৪০০ টাকায়।

 

বাংলাবাজারের ক্রেতা মাহমুদ বলেন, “কিছুদিন ধরে সবজির দাম আগুন ছাড়া কিছু নয়। উৎসব এলেই বাজারে আগুন লাগে। কিন্তু এবার মাছের দাম এত বেশি যে কিনতে সাহসই হয় না।”

 

নিম্ন আয়ের মানুষরা জানাচ্ছেন, এক হাজার টাকায় এখন পাঁচ সদস্যের পরিবারের একদিনের বাজার করাই কষ্টসাধ্য। মাত্র দুই ধরনের সবজি কিনতেই ৩০০–৩৫০ টাকা খরচ হয়ে যাচ্ছে।

 

বরিশাল বহুমুখী সিটি মার্কেটের এক দোকানদার নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “পূজার ছুটিতে পোর্ট বন্ধ থাকায় সরবরাহ কমে গেছে। তাই দাম বেড়েছে। তবে পোর্ট খুললে দুই-এক দিনের মধ্যে বাজার স্বাভাবিক হয়ে যাবে।”

তিনি আরও জানান, “খুচরা বাজারে দাম কিছুটা বেশি কারণ লেবার খরচ, ভ্যান ভাড়া, ইজারা ও বিদ্যুৎ বিল—সব মিলিয়ে ব্যয় বাড়ছে।”

 

বাজার বিশ্লেষকদের মতে, উৎসবকালীন সরবরাহ সংকট ও পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধিই বাজার অস্থিরতার মূল কারণ। পোর্ট ও পরিবহন কার্যক্রম স্বাভাবিক হলে দাম কিছুটা কমে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।

আরও দেখান

সম্পর্কিত খবর

Back to top button