বরগুনা

বরগুনায় শ্যালিকাকে ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে জোড়া খুন, দুলাভাইকে মৃত্যুদন্ড

বরগুনা করেসপনন্ডেন্ট, বরিশাল পোস্ট ॥ বরগুনায় নিজের আপন শ্যালিকাকে ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে নারীকে জখম ও দুই শিশুকে হত্যার দায়ে আসামী দুলাভাই ইলিয়াসকে মৃত্যুদন্ডের আদেশ দিয়েছে বরগুনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল।

রোববার দুপুরে ওই ট্রাইব্যুনালের বিচারক জেলা ও দায়রা জজ বেগম লায়লাতুল ফেরদৌস এ আদেশ দিয়েছেন। আসামী হলো, বরগুনা সদর উপজেলার আয়লাপাতাকাটা ইউনিয়নের পূর্ব কেওরাবুনিয়া গ্রামের মৃত আবুল হোসেন পহলানের ছেলে মোঃ ইলিয়াস পহলান (৩৫) রায় ঘোষনার সময় আসামী আদালতে উপস্থিত ছিল।

জানা গেছে, বরগুনা সদর উপজেলার ফুলঝুড়ি ইউনিয়নের গুদিঘাটা গ্রামে গৃহবধু রিগানের ভাই রিপন সরদার বরগুনা থানায় ২০২৩ সালে ৪ আগস্ট সকালে অভিযোগ করেন, তার বোন রিগান তিন বছরের শিশু তাইফাকে নিয়ে তাদের পৈত্রিক ভিটির পশ্চিম ভিটির টিনের বসত ঘরের বসবাস করেন। পাকুরগাছিয়া গ্রামের খবির হাওলাদারের ছেলে মোঃ হাফিজুল (১০) তার বোনের ঘরে থেকে রোডপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় পড়াশোনা করে। রাতে বাদির বোনকে হাফিজুল পাহারা দেয়।

ঘটনার দিন ২০২৩ সালের ৩ আগস্ট রাত ১২ টার পরে হাফিজুল বাদির বোনের ঘরে ঘুমায়। পরের দিন সকালে বাদির বড় বোন মোর্শেদা ফোনে তাকে জানায়, কে বা কারা রাতের অন্ধকারে মোঃ হাফিজুলকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। বাদির বোন রিগান ও তার শিশু কন্যা তাইফাকে কুপিয়ে গুরুত্বর জখম করেছে। তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক। চিকিসারত অবস্থায় রিগানের সন্তান তাইফাও মারা যায়। বাদি সংবাদ পেয়ে ৪ আগস্ট বাড়ি এসে বরগুনা থানায় অভিযোগ দেয়। বাদি আরও অভিযোগ করে মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত আসামী মোঃ ইলিয়াস পহলান তার বড় বোনের জামাতা। আমার বোন রিগানকে ধর্ষণ করতে ইলিয়াস পহলান রিগানের বসত ঘরে কৌশলে প্রবেশ করে। রিগান ডাক চিৎকার দিলে হাফিজুলের ঘুম ভেঙ্গে যায়। রিগানকে রক্ষা করতে এগিয়ে যায় হাফিজুল। এ সময় ইলিয়াস ধারালো দা দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে তিনজনকে জখম করে। রিগান মারাত্মক আহত হলেও দুই শিশু মারা যায়। পুলিশ তদন্ত করে ইলিয়াসের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়। আদালত তিনটি ধারায় বিভিন্ন মেয়াদের সাজা দেয়।

 

রায়ে উল্লেখ করেন, ইলিয়াস ভিকটিম মোসাঃ রিগানকে ধর্ষনের উদ্দেশ্যে তার ঘরে ঢ়ুকে ধর্ষন করতে বাধার সম্মুখিন হয়ে সেখানে উপস্থিত ১০ বছরের শিশু হাফিজুল ও তিন বছরের শিশু তাইফাকে উপর্যুপরি একাধিক কোপ দিয়ে হত্যা করে। আসামী দুটি হত্যাকান্ড সংঘটিত করায় তাকে দোষী সাব্যস্থ্য করে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ডে এবং এক লাখ টাকা অর্থদন্ডে দন্ডিত করে। ফঁসিতে ঝুলিয়ে আসামীর মৃত্যুদন্ড কার্যকর করার জন্য সংশ্লিষ্ট জেল সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন। বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্ট হাইকোর্ট বিভাগ কর্তৃক মৃত্যুদন্ড বহাল রাখা সাপেক্ষে মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত তাকে গলায় রশি দ্বারা ঝুলিয়ে ফাঁসি (মৃত্যুদন্ড) কার্যকর করতে হবে।

 

রাস্ট্র পক্ষে বিশেষ পিপি রনজুয়ারা সিপু বলেন, এই যুগান্তকারী রায়ে বাদি ও রাস্ট্র সন্তোষ্ট। আসামীর আইনজীবী না থাকায় আদালত আইনজীবী এম মজিবুল হক কিসলুকে ইলিয়াসের পক্ষে মামলা পরিচালনার জন্য নিয়োগ দেয়।

তিনি বলেন, আমি সাধ্যমত মামলা পরিচালনা করেছি। আসামী জেল কোড অনুযায়ী হাই কোর্টে আপীল করতে পারবেন।

আরও দেখান

সম্পর্কিত খবর

Back to top button